বাউফলে লেদা পোকার আক্রমনে বিপাকে কৃষকরা

বাউফলে লেদা পোকার আক্রমনে বিপাকে কৃষকরা

বাউফল(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বাউফল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে লেদা পোকার আক্রমনে আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছে কৃষক। এর ফলে তাদের মধ্যে এখন হতাশা বিরাজ করছে।
ধুলিয়া ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমান জানান, তিনি এ বছর সাড়ে ৩ কানি  জমিতে ইরি-৫২ জাতের ধান চাষ করেছেন। কিন্তু শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমনে  আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। কেবল মজিবুর রহমানই নয়, আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তুলেছেন একই গ্রামের সেলিম , জাহাঙ্গির খান, নিজাম খান, জসিম সহ অধিকাংশ কৃষক। পোকার আক্রমন ঠেকাতে কেউ কেউ আবার ক্ষেতের আধা-পাকা ধানে ওষুধ ছিটাচ্ছেন।
নাজিরপুর ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামের রাহিমা, ধানদী গ্রামের আহেদ আলী, আলতু রাঢ়ী, বড়ডালিমা গ্রামের জাহাঙ্গির মৃধা, তালতলী গ্রামের ছোবহান হাওলাদার, ভরিপাশা গ্রামের সেলিম গাজীসহ অনেক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া নদী পাড়ে কেবল মঠবাড়িয়া কিংবা ঘুচরাকাঠিই নয়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলেও শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমন করেছে।
ঘুচরাকাঠি গ্রামের বশার নামের এক কৃষক জানান, ক্ষনিকাটা লেদা পোকার আক্রমনে তার চাষের স্থানীয় মাপের প্রায় তিন কানি জমির মোতামোটা, ইরি-৫২, স্বাক্ষরখোড়া জাতের ধান বিনস্ট হয়েছে। একই পোকার আক্রমন স্থানীয় মাপের ২ কানি জমির ধান বিনষ্ট হওয়ার পথে মঠবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গির খানের।
ধানদী গ্রামের কৃষক রহিম মৃধা বলেন, ‘ধানের বাজার দর ভাল অইলে কি আর না অইলেওই বা কি। এবার প্রায় দেঁড় একর জমির ধানই বিনস্ট হইয়া গেছে কেবল পোকার আক্রমনে।’ এদিকে পোকার আক্রমনে এক একর জমির ধানের শীষই বের হয়নি মোহাম্মদ আলী নামে একই গ্রামের অপর এক কৃষকের।
কৃষক আলী বলেন, ‘বাজারের ওষুধেও কোন কাজ করে নাই। এবার বৃষ্টিপাতের কারণে সঠিক সময়ে ধান ক্ষেত শুকাতে পারেনি। শীষও শীষের কানা কেটে ধান বিনষ্ট করছে। গত বছর আর এই চলতি মৌসুমের মতো ১৫-২০ বছরেও লেদা পোকার এমন মারাত্মক আক্রমন আর হয়নি। ক্ষেতে এখন ঝড়া ধান ছড়িয়ে আছে।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের প্লান্ট ফাইটোলোজির এসোসিয়েট প্রফেসর ড.শাহ মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন,‘অতি বৃষ্টিপাতের মতো আবহায়ার বিরুপ প্রভাব,রোদ,তাপমাত্রা,শীত,গাছের শক্তিমত্তা এসব কারণে বংশবৃদ্ধি ঘটে পোকার আক্রমন হতে পারে।প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করা যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমি আমন চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন,‘আমাদের লোকজন লিফলেট বিতরণসহ মাঠে কৃষকদের সচেতন করে নিয়মিত প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। সার্বক্ষনিক ক্ষেতের অবস্থা জানানোর জন্য কৃষকদেরকেও অনুরোধ করা হয়েছে।