বাউফলে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৫ হাজার মধ্যবিত্ত পরিবার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। প্রয়োজন সার্বজনীন ত্রান সহায়তায়

বাউফলে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৫ হাজার মধ্যবিত্ত পরিবার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। প্রয়োজন সার্বজনীন ত্রান সহায়তায়

সাইফুল ইসলাম, বরিশাল লাইভ:
বাউফলে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো অভাবের যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। ঘরবন্ধী মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো পারছে না অভাবে কথা প্রকাশ করতে। লোকলজ্জায় নিচ্ছে না লাইনে দাড়িয়ে ত্রান সহায়তা। অর্ধাহারে কিংবা আধাপেট খেয়ে দিনযাপন করেছে। লোক লজ্জার ভয়ে চুপিচুপি করে সর্বাঙ্গ ব্যাথিত করে তুলেছে। প্রয়োজন সার্বজনীন ত্রান সহায়তায় অধিকার বাস্তবায়ন করা।

উপজেলার কয়েকজন মধ্যবিত্ত পরিবার ও সূধী মহলের সাথে কথা বলে জানাগেছে,সরকারি দরিদ্র ও হতোদরিদ্র পরিবারকে বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচী থাকলেও মধ্যবিত্ত পরিবার জন্য কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। কাগজে কলমে ২/১ টি কর্মসূচী থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির ব্যক্তি আক্রোস, অর্ন্তদ্বন্ধ, দলীয় মতনৈক্য, তেলবাজি না করার কারনে ত্রান তালিকায় নাম উঠেছে না। ফলে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো অন্তরায়ে সর্বাঙ্গে ব্যাথায় ছটফট করেছে।

অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানাগেছে, বাউফলে ১৫০ গ্রাম রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উপজেলায় প্রায় ৫৪ হাজার পরিবার। বর্তমানে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৯ হাজার দিন মজুর তালিকা তৈরি হচ্ছে। আংশিক দিন মজুর পরিবার মধ্যে ত্রান সহায়তা দেওয়া হলেও  বেশির ভাগ পরিবার ত্রানের অপেক্ষায় দিন গুনছে। কিন্ত মধ্যেবিত্ত পরিবারে ত্রান সহায়তা পৌছানো উদ্যোগ নেই। বেসরকারি হিসাব প্রতি গ্রামে ১শত মধ্যবিত্ত পরিবার গড় হিসাবে মধ্যবিত্ত পরিবার রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার। এ পরিবারগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি জমির মালিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, এনজিও কর্মী. গ্রাম পুলিশ, পল্লী চিকিসক, উদ্যোক্তা, ধর্মীয় নেতা , প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি বেসরকারি নিম্ম কর্মচারী।  

বাউফল সরকারি কলেজ অধ্যাপক শিখা ব্যানার্জী বলেন, রাষ্ট্রীয় দুর্যোগকালীন সময় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ মধ্যবিত্ত পরিবার। সব সময়ই পর্যাপ্ত না থাকায় মধ্যবিত্তের তালিকা আসেনি। ক্রাইটার নিয়ে দরিদ্র ও হতোদরিদ্র তালিকা তৈরি হয়ে থাকে। নানা বাধা অতিক্রম করে কমবেশি দিন মজুর কাজ করে সাধারন জীবন যাপন করে থাকে। অথচ মধ্যবিত্ত পরিবার পারে না ্আইন ভঙ্গ করতে। না পারে লাঙ্গল কিংবা রিকসা হ্যান্ডেল ধরতে। পারছেনা ত্রান সহায়তার জন্য হাত দিতে।

কালাইয়া বন্দরের প্রবীন ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আবদুল খালেক বলেন, গত ১ মাস ব্যাপী করোনা নিয়ে সারাদেশ অবরোধ চলছে। এ ধারাবাহিকতায় মধ্যবিত্ত পরিবার ঘরমুখী হয়ে আছে। এর মধ্যে রয়েছে, কৃষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক,সরকারি-বেসরকারি নিম্ম বেতনের কর্মকর্তাকর্মচারী ও প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক কর্মী। এর জন্য ত্রান সহায়তা প্রয়োজন। জনপ্রতিনিধি পাশাপাশি তৃতীয় উদ্যোক্তা নিয়ে এ জরিপ পরিচালণা করা।

বাউফল উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো: আবুল বসার বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবার ত্রান সহায়তার জন্য সিভিল সোসাইটি থেকে প্রতিনিধিত্ব করা। পরিবারের প্রধানের নিকট ত্রান পৌছে দেয়া। ত্রান সহায়তা  পৌছানোর জন্য যাতায়াত বরাদ্ধ রাখা।
বাউফল আদর্শ গালস ্স্কুল প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা দূনীর্তি প্রতিরোধ কমিটি সভাপতি কামারুজ্জামান মিয়া (কালাচান স্যার) বলেন, দুযোর্গ কালীন সময় দরিদ্র নিম্ম মধ্যবিত্ত ভেদাভেদ রাখা উচিত না। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে সহায়তা করা। বর্তমান সরকার প্রতিনিধি যে ত্রান সহায়তা করছে তার মধ্যে আতœীয়তাকরন হয়নি তা এড়িয়ে দেয়া যাবে না। প্রতিটি পরিবারে  ত্রান পৌছানো হোক। বর্তমান গনমাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে হাইলাইট না করে ত্রান বিতরনকে হাইলাইট করা হয়েছে। যা খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাংবাদিক জানান, সমাজে সৃজনশীল পেশা হচ্ছে সাংবাদিকতা। এ পেশায় টিকে থাকতে হলে জীবিকার জন্য অন্য পেশার প্রয়োজন। দু:খের বিষয়, একজন সাংবাদিক তেমন কোনো উপার্জন নেই। সমাজ চেঁখে মধ্যবিত্ত পরিবার দেখা গেলে ওই পরিবারটি অসহায়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সমাজ সাধারন দরিদ্র মানুষে ও কথা লেখনির মাধৗমে তুলে ধরলেও সাংবাদিক আর্থিক অবস্থা কেউ তুলে ধরে না। একজন দরিদ্র পরিবার ত্রান সহায়তা গনমাধ্যমে ফলাও করে তুলে ধরেন। রাতে গিয়ে ওই সাংবাদিক পরিবার আধাপেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

গোসিংগা গ্রামে সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুচ মোল্লা জানান, লোকচোঁখে মধ্যবিত্ত হিসাবে দেখা গেলেও প্রকৃতি যেন হতো দরিদ্র পরিবার। সত্তোর্ধ বয়সী ইউনুচ মোল্লা জানান, জনগনের বিপুল ভোটে ১৯৮৪ সালে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলাম। এলাকায় সুধী হিসাবে পরিচিতি হলেও অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক। নিজস্ব চাষাবাদ জমি নেই। সরকারি ভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বয়স্ক ভাতা নাম থাকলে ৮ মাস পূর্বে এ ভাতা পেয়েছে। আক্ষেপ করে ইউনুচ মোল্লা জানালেন, ত্রান সামগ্রি পাওয়া অধিকার থাকলেও বর্তমান চেয়ারম্যান মেম্বার নিটে বলতে পারি না ?