বাউফলে আতাহারের বিরুদ্ধে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

বাউফলে আতাহারের বিরুদ্ধে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

সাইফুল ইসলাম, বাউফল (পটুয়াখালী) :  
চাচার টিপসই জাল করে সম্পত্তি লিখে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জৈনিক আতাহার ফকিরের বিরুদ্ধে। আতাহার ফকির পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ঝিলনা গ্রামের মৃত আজাহার ফকিরের ছেলে। এ ব্যাপারে কাদের ফকিরের ৩ ছেলে বাউফল প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগ করেছে। ঝিলনা গ্রামে কাদের ফকিরের ৩ ছেলে রফিক, সালাম ও ফোরকান ফকির। মোতাহার, আতাহার এবং আছিয়া বেগম বাবা মারা যাবার পর চাচা কাদের ফকির তাদের মা‘কে বিয়ে করার সুবাদে এক ঘরে বসবাস করে। মেয়ে আছিয়া বেগম স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করেছে। সালাম, রফিক ও ফোরকান ফকির চাকরি সুবাদে জেলার বাইরে অবস্থান করেছে। বাড়ীতে মোতাহার এবং আতাহার ফকির দুই ভাই বৃদ্ধ কাদের ফকিরকে নিয়ে থাকতেন। ভাই বোনের মধ্যে মোতাহার ছিল সরল সোজা এবং আতাহার ফকির হচ্ছেন খুবই সুক্ষ বুদ্ধিমান।

মোতাহার সরল সোজা বিধায় আতাহার উপর বিশ্বস্থ ছিল অন্যান্য ভাইবোনদের। সেই সুযোগে আতাহার ফকির নিজের নামে দানকৃত একটি দলিল প্রকাশ করে। যার দলিল নং ৬৯৩৮/২০১৫ বাউ। ৫০শতাংশ জমি কাদের ফকির জীবিত থাকাকালীন দান করেছে বলে উল্লেখ রয়েছে। চাচা মারা যাওয়ার পরে মোতাহার তার ছেলে জাপান প্রবাসী ঘর তুলতে চাইলে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে ভাই আতাহার। এবং অন্যান্য ভাই বোন বাড়িতে যাতে আসতে না পারে সেই জন্য মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। এ দিকে আতাহার ছেলে রাহাত ফকির বাংলাদেশ রাজারবাগ পুলিশ লাইন ডিবিতে চাকরী করেছে। এ পুলিশ দাপট দিয়ে  নিয়মিত ভয়ভীতি দেখাইতেছে ভাইদেরকে।
সালাম ও রফিক ফকির স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক নিয়ে বাড়িতে গেলে এ নাটকীয় ঘটনার সত্যতার মিল পাওয়া যায়। উপজেলার সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরত্ব কনকদিয়া ইউনিয়নের ঝিলনা গ্রাম। ঝিলনা মোল্লা বাজার থেকে ১৫ মিনিট ট্রলার চালিয়ে বাড়ীতে পৌছলে আতাহার ঘর থেকে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেন। পরিবারের অন্যন্য সদস্য জবেদা ও খালেদা নানা কথা বলে মুল ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করেন। সরেজমিন চিত্র উত্তর ভিটে টিনের ঘর আতাহার সালাম রফিক ফোরকান একসাথে যৌথ ঘর তোলেন। পাশেই মোতাহার ফকির ঘর। আতাহার ওই ঘরের সম্পূর্ন দখল করছে।
মোতাহার ফকিরের বড় জামাতা আলমগীর হোসেন জানান, দাদা শশুর কাদের ফকির শিক্ষিত ছিলেন। বিয়ের কাবিন নামায় তার নিজ হাতের স্বাক্ষর রয়েছে। তাছাড়া মৃত্যু পুর্বমুহুর্ত পর্যন্ত তার স্বাক্ষর দেয়ার মতো ক্ষমতা ছিল। জৈনিক আতাহার ফকিরের একটি দানকৃত দলিল রয়েছে তাতে কাদের ফকির স্বাক্ষর না করে টিপসই রয়েছে এবং দানকৃত দলিল পরিচিতি নিজস্ব কোনো ব্যক্তি নয়। দানকৃত দলিলে ভিটেবাড়ি উল্লেখ রয়েছে এবং স্বাক্ষর পরিবর্তে টিপসই। এতে প্রমানিত হচ্ছে এ দানকৃত দলিল ভ’য়া।
এ ব্যাপারে কনকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, সালাম, রফিক, ফোরকান ও মোতাহার ফকির গং ইউনিয়ন পরিষদে আবেদনের প্রেক্ষিতে আতাহার ফকিরকে ডাকলে তিনি আসেন নাই। তারা স্থানীয় শালিশ ব্যাবস্থা না মানায় আমি পেপার্স ফরওরডিং কোর্টে  পাঠাইছি।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ও বগা ইউপি চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার জানান, মোতাহার ফকির গং বিষয়টি জানায়। ফয়সালা করার জন্য আমি আতাহার ফকিরের সাথে কথা বললে আতাহার স্বীকারও করে। ফয়সালা করবে মর্মে আতাহার ফকিরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ ওসিকে বলেছি এটা দেখব। পরে আতাহার আর দেখা করেনি।
এ বিষয় স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিস দেন-দরবার হলে আতাহার তা মানছে না। এ বিষয় আতাহার ফকির বাড়িতে গেলে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে নিজেকে আড়াল করার জন্য স্থান ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে মোবাইলযোগে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সব মিথ্যা। পুলিশ বিভাগে কর্মরত রাহাত ফকির জানান, দাদা আমাদেরকে জমি দানপত্র দিয়ে গেছেন।