রাঙ্গাবালীতে জেলেদের জালে ধরা পরছে প্রচুর ইলিশ মাছ

রাঙ্গাবালীতে জেলেদের জালে ধরা পরছে প্রচুর ইলিশ মাছ

এম এ ইউসুফ আলী,রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রতিনিধি :পটুয়াখালী জেলাধীন রাঙ্গাবালী উপজেলার কয়েকটি জেলে পল্লীতে কয়েকদিন যাবত জেলেদের জালে প্রচুর পরিমান ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। এখানের নদ-নদী ও সাগর মোহনায় প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়ায় জেলে পল্লীতে বিরাজ করছে চরম উৎসব । উপজেলার বিভিন্ন মাছের ঘাট, আড়ৎ, পাইকারী ও খুচরা বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাক-ডাকে প্রতিদিন মুখরিত হচ্ছে ইলিশের বাজার।

আর দীর্ঘদিন পর জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুঁটেছে জেলেদের মুখে। উপজেলার মৌডুবী মাছের ঘাট, চরমোন্তাজ মাছ ঘাট,তুলাতুলি মাছ ঘাট, চালিতাবুনিয়া মাছের ঘাট,কোড়ালিয়া ঘাটসহ বিভিন্ন ইলিশের মোকামে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। মোকামগুলোতে জেলেদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। সারারাত নদীতে মাছ ধরে সকাল বেলা ঘাটগুলোতে চকচকে ইলিশ নিয়ে আসে জেলেরা। আবার অনেক ব্যবসায়ী সরাসরি লঞ্চে বা ট্রাকে করে ঢাকা, খুলনা, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় মাছ সরবরাহ করে থাকেন। মৎস্য ব্যবসায়ীরা পাইকারিভাবে এখান থেকে মাছ কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করেন।উপজেলার মৌডুবী খাল মাছ ঘাটের আড়ৎদার মো.রুবেল হাওলাদার জানান, এবার মৌসুমের প্রথম দিকে তেমন একটা ইলিশ পাওয়া না গেলেও বর্তমানে ইলিশের পরিমান বাড়ছে। 

কয়েকদিন আগেও যেসব আড়তে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার ইলিশ বিক্রি হতো, সেখানে এখন লাখের উপরে বিক্রি হয়। সামনের দিনগুলোতে ভারি বর্ষনের সাথে সাথে জেলেদের জালে আরো ইলিশ ধরা পড়বে বলে তিনি জানান। এজন্য তিনি সরকারের জাটকা সংরক্ষন কার্যক্রমকে স্বাগত জানান। চালিতাবুনিয়ার বিবিট হাওলা এলাকার বাসিন্দা জেলে এলিট গাজী, রিপন গাজী, ও কেনান মাঝী বলেন, তারা ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা করে আগুনমুখায় ইলিশ শিকার করেন। কয়েকদিন আগে এমন অবস্থা ছিল যে ইলিশ না থাকায় ট্রলারের তেলের খরচও উঠেনি। কিন্তু এখন তাদের নৌকায় দৈনিক ০৫ থেকে ০৭ হাজার টাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান। রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো:মোসলেউদ্দিন খান বলেন, এ বছর বর্ষা মৌসুমের প্রথম দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাব দেখা দিলেও এখন বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। মূলত পানির গভীরতার সাথে ইলিশের নিবির সম্পর্ক রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আরো ইলিশ পাওয়া যাবে। অন্যদিকে নদীতে ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়াতে বরফের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ সংরক্ষন ও বাজারজাতকরনের জন্য বরফের কোন বিকল্প নেই।  কিন্তু রাঙ্গাবালী উপজেলায় বরফ কল না থাকায় মৎস ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।তাদের কে বরফ আনতে হয় পার্শবর্তী উপজেলা গলাচিপা অথবা কলাপাড়া থেকে।ওখানের বরফকলগুলোতেও ব্যস্ততা বেড়ে গেছে কয়েকগুন। 

গলাচিপা বরফ কলের মালিক জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বরফের ব্যাপক চাহিদা তার এখানে। প্রচুর চাপ থাকায় বরফ বিক্রি করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।