পর্ব পরিচিতি---পর্ব--৭--ARTHROPODA জীববিজ্ঞান---২য় পত্র
শিখা ব্যানার্জী
প্রভাষক,প্রাণিবিজ্ঞান
বাউফল সরকারি কলেজ
বাউফল,পটুয়াখালী
প্রাণিজগতের বৃহত্তম পর্ব হল --Arthropoda --কীটপতঙ্গ যার অন্তর্ভুক্ত। আর পৃথিবীর এমন জায়গা খুব কমই আছে ,যেখানে কীট-পতঙ্গ নেই । জীবজগতের প্রায় ৮০% এই পর্বের ।এ পর্বে জীবিত প্রজাতির সংখ্যা –১,২৫৭০৪০টি।এরা সর্বভুক,মুক্তজীবী বা পরজীবী। বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে মেরুদন্ডীপ্রাণীদের পরেই এদের স্থান। খরসঁষঁং নামক জীবন্ত জীবাশ্মও এই পর্বেরই প্রাণী ।
সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য--
(১) এদের দেহ সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গবিশিষ্ট,দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম।
(২) খন্ডায়ন বাহ্যিক,দেহ কয়েকটি অঞ্চলে বা ট্যাগমায় বিভক্ত।যেমন ---মস্তক,বক্ষ ও উদর। চিংড়িতে যেমন-শির:বক্ষ। মস্তকে একজোড়া অ্যান্টেনা ও একজোড়া পুঞ্জাক্ষি থাকে।
(৩) এদের বহি:কংকাল শক্ত,কারন এটি কাইটিন দিয়ে তৈরি,র্পূণাঙ্গ অবস্থায় পরিণত হবার পূর্বে কয়েকবার এই বহি:কংকাল মোচিত হয় আর প্রাণী আকারে বৃদ্ধি পায় ।
(৪) মুখ সর্বদা বিভিন্ন প্রকার মুখোপাঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত থাকে।
(৫) এদের দেহগহবরকে হিমোসিল বলে,কারন এর মধ্য দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয় ।
(৬) মালপিজিয়ান নালিকা এদের প্রধান রেচন অঙ্গ,যেগুলো পৌষ্টিক নালির সাথে যুক্ত থেকে রেচন কার্য সমাধা করে ।
(৭) এদের রক্ত শ্বসনে অংশ নেয়না,তাই ট্রাকিয়া নামক পৃথক ও বৈশিষ্ট্যপূর্ন নালি দ্বারা এদের শ্বসন সম্পন্ন হয়। তবে অন্য ব্যবস্থাও আছে । যেমন চিংড়ি,রাজকাঁকড়া বুকগিল-এর সাহায্যে শ্বসন কাজ চালায় ,আবার কাঁকড়া-বিছা,মাকড়সা ইত্যাদিরা বুকলাঙ-এর দ্বারা শ্বাস নেয়। আবার কিছু কিছু প্রাণী দেহত্বকের সাহায্যে শ্বসন সম্পন্নকরে।
(৮) এরা একলিঙ্গ,সাধারণত অন্ত:নিষেক হয়,এদের জীবনচক্রে রূপান্তর দেখা যায়,যেমন আরশোলায় অসম্পূর্ণ রূপান্তর ঘটে,আবার প্রজাপতি,মথ ইত্যাদিতে সম্পূর্ণ রূপান্তর ঘটে।
পর্বের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী---
- Periplaneta americana
- Carcinus manius
- Musca domestica
- Pieris brassicae
- Limulus polyphemus
আর্থোপোডার অর্থনৈতিক গুরুত্ব---
সদস্য সংখ্যার বিশালতা নিয়ে যেমন এই পর্বটি প্রাণিজগতে বৃহত্তম পর্বের স্থানটি দখল করে নিয়েছে,তেমনি এর অর্থনৈতিক গুরুত্বও ব্যাপকতার দাবি রাখে ।
চিংড়ি অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাদ্য,যা আমাদের রসনাকে পরিতৃপ্ত করে। এটি একটি রপ্তানিযোগ্য পণ্যও বটে,যেটি এই পর্বের।
মধু খেতে কে না ভালবাসে?এটি সুমিষ্ট,অতি উচ্চমানের প্রোটিন-সমৃদ্ধ দ্রব্য,যেটি আর্থোপোডা পর্বের মৌমাছির গলবিল নি:সৃত নির্যাস।
প্রজাপতি এ পর্বেরই প্রাণী,এরা ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায় আর অজান্তেই পরাগায়ন ঘটিয়ে উদ্ভিদ জগতের উপকার করে চলেছে ।
এরকম বহু উদাহরন দেয়া যায় এপর্বের প্রাণীদের নিয়ে,যেগুলো পৃথিবীব্যাপী অবস্থান করে আমাদের বাস্তুতন্ত্রকে সমৃদ্ধ করে চলেছে।আর প্রকৃতির ভারসাম্যকে বজায় রাখছে।
প্রশ্নমালা---
(১) পৃথিবীর কত শতাংশ প্রাণী আর্থোপোডা পর্বের?
(২) ১টি জীবন্ত জীবাশ্মের বৈজ্ঞানিক নাম লিখ।
(৩) ট্যাগমাটা কাকে বলে?
(৪) এ পর্বের প্রাণীদের খোলস মোচন হয় কেন?
(৫) হিমোসিল কাকে বলে?
(৬) এদের রেচন অঙ্গ কিভাবে রেচন দ্রব্য নির্গত করে?
(৭) এদের শ্বসনে কিরূপ বৈচিত্র পরিলক্ষিত হয়?
(৮) মধু কি?
(৯) প্রজাপতি কিভাবে উদ্ভিদের উপকার করে?
(১০) গৃহমাছি ও প্রজাপতির বৈজ্ঞানিক নাম লিখ।
Comments (0)
Facebook Comments (0)