জীববিজ্ঞান ২য় পত্র (উচ্চ মাধ্যমিক)

জীববিজ্ঞান ২য় পত্র (উচ্চ মাধ্যমিক)

পর্ব পরিচিতি    
    পর্ব--CHORDATA

    শিখা ব্যানার্জী
    প্রভাষক,প্রাণিবিজ্ঞান
    বাউফল সরকারি কলেজ
    বাউফল,পটুয়াখালী
প্রাণিজগতের মুখ্য পর্ব ৯টি। সরল বৈশিষ্ট্য থেকে ক্রমান্বয়ে জটিল বৈশিষ্ট্যধারী জীবের উপর ভিত্তি করে পর্বগুলোকে সাজানো হয়েছে। সে হিসেবে Chordata হল নবম পর্ব। অতএব বলার অপেক্ষা রাখেনা ,এটি যেমন মুখ্য পর্বের শেষতম পর্ব,তেমনি বৈশিষ্ট্যের বিচারে উন্নতও বটে।এ পর্বের এ পর্যন্ত সনাক্তকারী প্রজাতির সংখ্যা----৬৮,৬২৬টি।
কমপক্ষে নি¤েœাক্ত ৩টি বৈশিষ্ট্য থাকলে তবেই তাদের কর্ডাটা বলা যাবে।যেমন-
(১)    ভ্রƒণাবস্থায় অথবা আজীবন প্রাণীর পৃষ্ঠ-মধ্যরেখা বরাবর নিরেট ,দন্ডাকার ও স্থিতিস্থাপক নটোকর্ড থাকবে ।
(২)    নটোকর্ডের উপরে লম্ব অক্ষ বরাবর একটি ফাঁপা নলাকার ¯œায়ুরজ্জু থাকবে। পরবর্তীতে এটি মস্তিষ্ক ও সুষু¤œা কান্ডে পরিনত হবে ।
(৩)    জীবনের যে  দশায় বা আজীবন গলবিলের দুপাশে কয়েক জোড়া ফুলকা-রন্ধ্র থাকবে।উন্নত কর্ডেটদের ফুলকা-রন্ধ্র বিলুপ্ত হয়ে ফুলকা বা ফুসফুসে পরিনত হয়।
এছাড়া কর্ডাটার অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হল –
(১)    গলবিলের নিচে এন্ডোস্টাইল থাকে,যা পরবর্তীতে গ্রন্থিতে রূপ নেয় ।
(২)    হৃৎপিন্ড দেহের অংকীয়দেশে অবস্থান করে ।
(৩)    রক্ত-সংবহনতন্ত্র বদ্ধ,অর্থাৎ সর্বদাই নির্দিষ্ট রক্তবাহিকা ও হৃপিন্ডে আবদ্ধ থেকে প্রবাহিত হয়,কখনই সিলোমে মুক্ত হয়না ।এদের হেপাটিক পোর্টাল তন্ত্রআছে ।
(৪)    প্রকৃত সিলোমযুক্ত প্রাণী,খন্ডায়ন অভ্যন্তরীণ।
(৫)    দু-জোড়া পার্শ্বপদ আছে,কিছু প্রাণীর পায়ু-পরবর্তী লেজ থাকে। কিছু প্রাণীতে এটি বিলুপ্ত হয়ে যায় ।
(৬)    একলিঙ্গ প্রাণী,যৌন জনন প্রক্রিয়ায় বংশ-বিস্তার করে ।
     ঈযড়ৎফধঃধ  পর্বটি ৩টি উপপর্বে বিভক্ত। যথা--
উপপর্ব--(১) Urochordata

উপপর্ব--(২) Cephalochordata           
উপপর্ব--(৩) Vertebrata
উপপর্ব  Urochordata I Cephalochordata  প্রাণীদের দেহে মেরুদন্ড নেই বলে এদের অমেরুদন্ডী কর্ডেট বা Protochordata বলে অভিহিত করা হয় ।
উপপর্ব--(১)) Urochordata-এই উপপর্বের প্রাণীরা সবাই সামুদ্রিক,ভ্রƒণাবস্থায় যদিও এদের দেহে কর্ডাটার বৈশিষ্ট বিদ্যমান থাকে,কিন্তু পূর্ণাঙ্গ প্রাণীরা সেগুলোর অধিকাংশই হারিয়ে অনুন্নত কর্ডাটায় পরিনত হয় ।
এদের সামুদ্রিক জেট বা সামুদ্রিক ফোয়ারা  বলে,কারন,উত্তেজিত হলে    এরা অ্যাট্রিয়াল সাইফন দিয়ে সজোরে পানি বের করে দেয়।
এদের টিউনিকাটা বলে,কারন,ম্যান্টল নি:সৃত টিউনিসিন নামক পদার্থ দিয়ে এদের দেহ আবৃত থাকে।
এপর্যন্ত এদের ৩০০০ প্রজাতি সনাক্ত করা গেছে।
বৈশিষ্ট্য--
(১)    এরা একক বা কলোনি গঠন করে বাস করে।
(২)    পূর্ণাঙ্গ প্রাণীরা নিশ্চল,লার্ভাদশায় নটোকর্ড শুধু লেজে সীমাবদ্ধ থাকে।
(৩)    দেহ টিউনিক নামক অর্ধস্বচ্ছ আবরনে ঢাকা ।
(৪)    গলবিলে অসংখ্য স্টিগমাটা বা ফুলকা ছিদ্র থাকে।
(৫)    এরা উভলিঙ্গ,কিন্তু স্বনিষেক হয়না,এদের পরিস্ফুটন ট্যাডপোল লার্ভার মাধ্যমে সম্পন্ন  হয়।
(৬)    এদের প্রতীপ রুপান্তর ঘটে,অর্থাৎ উন্নত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে অনুন্নত বৈশিষ্ট্য লাভ করে।
Urochordata--উপপর্বের প্রাণীদের   বৈজ্ঞানিক নাম---
 

  1. Ascidia mentula
  2. Salpa maxima
  3. Molgula tubifera

প্রশ্নমালা
(১)    নটোকর্ড কি?
(২)    ফুলকা বা ফুসফুস কোথা থেকে তৈরি হয়?
(৩)    বদ্ধ রক্ত সংবহনতন্ত্র বলতে কি বুঝ?
(৪)    প্রোটোকর্ডাটা কারা?
(৫)    সামুদ্রিক জেট বলতে কি বুঝ?
(৬)    টিউনিক কি?
(৭)    এদের স্বনিষেক হয়না কেন?
(৮)    প্রতীপ রূপান্তর কি?