বাউফলে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি সড়ক নির্মাণ

বাউফলে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি সড়ক নির্মাণ

মোঃ দেলোয়ার হোসেন ,বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালী- বরগুনা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়  চার কোটি টাকা ব্যয়ে পটুয়াখালীর বাউফলের আমিরাবাদ-চন্দ্রপাড়া- মধ্য মদনপুরা  সড়ক নির্মাণ কাজ ২১ মাসের মধ্যে শেষ  হওয়ার কথা থাকলেও পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। ঠিকাদারের গাফিলতি ও এলজিইডির তদারকির অভাবে  ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী অত্যন্ত ১০ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ,পথচারী ও শিক্ষার্থীরা।
কেনো কাজ বন্ধ রয়েছে আর কবেই বা শুরু হবে এবিষয়ে জানতে এলজিইডি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রকল্প পরিচালকের কাছে জানতে চাইলে কোনো সদত্তোর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তারা। নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন ‘প্রকল্প পরিচালক’ আর প্রকল্প পরিচালক বলছেন ‘নির্বাহী প্রকৌশলী’ ব্যবস্থা নিবেন। এলজিইডির তথ্য মতে,উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আমিরাবাদ বাজার হতে চন্দ্রপাড়া চৌরাস্তা বাজার ভায়া মধ্য মদনপুরা বাজার পর্যন্ত ৪.২৯০ কিলোমিটার সড়ক উনয়নে তিনটি প্যাকেজে ‘পটুয়াখালী- বরগুনা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’র আওতায়  ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৪ কোটি ৯৩লাখ ৩০ হাজার  ৬৯৬ টাকা ব্যয়ে  পটুয়াখালীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান  পল্লী স্টোরের সাথে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮সালের ২৬ সেপ্টেম্বর  এবং কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২০ সালের ২৮ জুলাই। তবে একাধিক বার মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে পারিনি ঠিকাদার।
সরেজমিন ও  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানায়,পল্লী স্টোর কাজ না করে  মদনপুরা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা এবং ব্যবসায়ী সবুর খানের কাছে কাজটি বিক্রি করে দেন। তারা সড়কের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ করেন। পরে পল্লী স্টোরের সাথে লেনদেন নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে সড়কের একাধিক স্থানে পাইলিং, একাধিক বাড়ির সংযোগ সড়ক ও কাপেটিং বাকি রেখে  কাজ বন্ধ করে দেন। এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন সড়কে চলাচলকারী প্রায় ১০হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রব গাজী বলেন, এই সড়ক দিয়ে কনকদিয়া,সূর্যমনি,নাজিরপুর ইউনিয়ন ও উপজেলা শহরের সাথে যাতায়ত করেন পথচারীরা। সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে ইটের খোয়া ফেলে রাখায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন একাধিক স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধের কারন জানতে চাইলে  মদনপুরা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা জানান, তিনি ও সবুর খান নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বরাদ্দের  ২ কোটি টাকা বিলও উত্তোলন করেন পল্লী স্টোর। ওই টাকা নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে জটিলতা দেখা দিলে তারা কাজ বন্ধ করেন দেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী স্টোরের স্বত্তাধিকারী মো. বাদল বলেন, কোনো জটিলতা নেই।  বর্ষার কারণে কাজ বন্ধ ছিল।  কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।
কেনো কাজ বন্ধ রয়েছে আর কবেই বা শুরু হবে এবিষয়ে জানতে এলজিইডি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রকল্প পরিচালকের কাছে জানতে চাইলে কোনো সদত্তোর পাওয়া যায়নি।  বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তারা। নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন ‘প্রকল্প পরিচালক’ আর প্রকল্প পরিচালক বলছেন ‘নির্বাহী প্রকৌশলী’ ব্যবস্থা নিবেন।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন বলেন, কাজ বন্ধের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নিবেন।
এলজিইডির পটুয়াখালী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ লতিফ হোসেন বলেন,‘ পটুয়াখালী- বরগুনা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কাজটি হচ্ছে। যা দেখা শুনা করেন প্রকল্প পরিচালক। যেকারনে এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ব্যবস্থা নিবেন। তাকে ফোন করুন।
বিষয়টি পরিচালক (পিডি) ইসমত কিবরিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন,‘ এবিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনিই সব।  সে যা ব্যবস্থা নিবেন তাই হবে।