লানিয়া-রনগোপালদী ব্রীজের শুভ উদ্বোধন ৩ উপজেলার যোগাযোগের মেলবন্ধন

লানিয়া-রনগোপালদী ব্রীজের শুভ উদ্বোধন ৩ উপজেলার যোগাযোগের মেলবন্ধন
লানিয়া-রনগোপালদী ব্রীজের শুভ উদ্বোধন ৩ উপজেলার যোগাযোগের মেলবন্ধন

নিয়ামুর রশিদ শিহাব, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা, দশমিনা ও বাউফল এই তিন উপজেলার মানুষের। শনিবার বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে খুলে দেয়া হলো তিন উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম মেলবন্ধন ’রণগোপালদী-উলানিয়া’ সেতু। বুড়াগৌরাঙ্গ নদের শাখা রণগোপালদী নদীর ওপর ২৪৫ মিটার দীর্ঘ সিসি গার্ডার সেতুটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা।
ব্রিজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পটুয়াখালী-৩ আসনের এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ.খ.ম. জাহাঙ্গীর হোসাইন। রতনদী-তালতলী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মতিউর রহমান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (বরিশাল বিভাগ) মোঃ ফারুক আহম্মেদ, আলীপুরা বাজার সংলগ্ন সুতাবাড়িয়া নদীর ওপর নির্মিতব্য ব্রিজের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আল্লাহ হাফিজ, বরিশাল অঞ্চলের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম, বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পটুয়াখালী অঞ্চল মোঃ নুর হোসেন হাওলাদার, গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান লিকন, গলাচিপা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ রফিকুল ইসলাম, দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভ্রা দাস, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সন্তোষ কুমার দে, দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবদুল আজীজ, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা টিটো, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার মুঃ শাহ আলম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ রুহুল আমিন ভূইয়া, জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোঃ মজিবর রহমান প্রমুখ। প্রসঙ্গত, চার দশক ধরে পটুয়াখালীর তিন উপজেলার মানুষ রণগোপালদী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল। শেষ পর্যন্ত সেতুর দ্বার খুলে দেয়ায় তিন উপজেলার মানুষের মধ্যে বইছিল আনন্দের মেলা। একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি, মিষ্টি বিতরণ, ছিল উচ্ছ্বাসভরা আবেগ। এক সময়ে দশমিনা ছিল গলাচিপা উপজেলার একটি অংশ। গত শতকের আশির দশকে গলাচিপা ও বাউফলের অংশবিশেষ নিয়ে দশমিনা উপজেলা গঠন করা হয়। কিন্তু এ নদী তিন উপজেলার মানুষের সড়ক যোগাযোগের প্রধান অন্তরায় ছিল। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়। কাজের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় ২০১৫ সালের ২১ জুলাই পর্যন্ত। রেট কোট অনুযায়ী এতে ব্যয় বরাদ্দ করা হয় ২৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। খরচ হয় ২৪ কোটি টাকা। ২৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে এবং ৭.৩ মিটার প্রস্থের এ সেতুতে ৩৫ মিটারের ৭টি স্যাপ, ১২টি পিলার, ২টি এ্যাবাটমেন্ট ও ৪০০ মিটার এপ্রোচ সড়ক ও সেতুর দুই পাশে মানুষের হেঁটে চলার জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এপ্রোচ সড়কের জমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। আরও অতিরিক্ত দেড় বছর সময় ক্ষেপণ করে ২০১৮-এর মাঝামাঝি সেতুর কাজ শেষ হয়।