বাউফলে অধিকাংশ ঘরে খাবার নেই: দুশ্চিন্তায় পড়েছে দিন মজুর

বাউফলে অধিকাংশ ঘরে খাবার নেই: দুশ্চিন্তায় পড়েছে দিন মজুর

সাইফুল ইসলাম,বাউফল
করোনা সংক্রামক প্রতিরোধে লকডাইন দিন যতোই বাড়ছে, ততোই অসহায় হয়ে পড়েছে দিন মজুর পরিবার। অধিকাংশ ঘরে খাবার শেষ হয়ে আসছে। ফুড়িয়ে যাচ্ছে হাতে কড়ি টাকা। করোনায় আক্রান্ত উপসর্গ গ্রামে ছড়িয়ে সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ক্রমান্নয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ।
বাউফল উপজেলার গ্রামাঞ্চলে করোনা ভাইরাস প্রভাব নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেল এমনি চিত্র ফুঁেট উঠেছে।
মঙ্গলবার। দুপুর ২টা দিকে। উপজেলা প্রশাসন চত্বরে ৩০/৩৫ জন দিনমজুর অপেক্ষামান রয়েছে। ইউএনও মহোদয়ের সাথে অসহায়-অভাবের কথা বলবেন। ওই মুহুর্তে কথা হয় কয়েক জনের সংগে। গোসিংগা হিরু মিয়া এলাকা থেকে এসেছেন কাজী সেরাজ। বয়স ষাটোর্ধ। পরিবার ১০ জন সদস্য। ঘরে খাবার নেই। পেশায় মিষ্টি দোকান। করোনা কারনে তিন সপ্তাহ ধরে ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। একই কাতারে রয়েছে তানিয়া বেগম, জহির হাওলাদার, নিয়াজ মোল্লাসহ ১৫/ ১৬ জন। পেশায় অটো রিকসা চালক। প্রত্যেক পরিবারেই ৪-৭ জন্য সদস্য রয়েছে। এ অপেক্ষাকৃত দলে যোগ দিয়েছে-দাশপাড়া এলাকা থেকে রশিদ গাজী, সোহাগ গাজী, দুলাল মোল্লাসহ ১০/১২ জন। পেশায় দিনমজুর। সবাইর মুখে একই কথা-কাজকর্ম বন্ধ। ঘরে খাবার নেই। কি ভাবে বাচঁব।  বিলবিলাস গ্রাম থেকে তাছলিমা বেগম জানান,স্বামী অটো চালক। রাস্তায় বের হচ্ছে না। ঘরে খাবার  নেই। চেয়ারম্যান বাড়ীতে গেলে দরজা খুলছে না। সনজিব হালদার জানান, সেলুন কাজের মাধ্যমে ৬ সদস্য পরিবার খরচ মিটাতাম। ২৬ মার্চ থেকে সেলুন বন্ধ রয়েছে। এখন কি খামু। তাই ইউএন ও স্যার কাছে আসছি।

খোজ নিয়ে জানাগেছে, বাউফল উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়েনে ৪৭ হাজার ৪ শত ২৭ জন দিনমজুর তালিকা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে দুর্যোগ ত্রান মন্ত্রনালয় অধিনে ২৩ শত পরিবারকে ত্রান সহায়তা করা হয়েছে। ইতে ছিল ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল এবং ১ টি সাবান। জেলা পরিষদ থেকে ৩শ আশ্রয়ন পরিবারকে (পরিবার প্রতি ১০ কেজি চাল) বিতরন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেন্বার আওতায় ৭ মেট্রিনক টন (৬ হাজার পরিবারকে জনপ্রতি ১০ কেজি) চাল বিতরন করা হয়েছে।

এদিকে তৈরিকৃত দিনমজুর তালিকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার আতœীয়তা ও, দলীয় করন এবং নির্বাচনী জের শক্রতায় অনেক পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। একই পরিবার একাধিক সদস্য ভোটার আইডি নম্বর নিয়ে দিন মজুর পরিবার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ফলে একই পরিবার একাধিক ত্রান সহায়তা পেলেও অন্যদিকে প্রকৃত দিন মজুর এ ত্রান সহায়তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলার কয়েকজন সুশীল ব্যক্তি জানান, জনপ্রতিনিধি তালিকা নয়, সেনাবাহিনী ও উপজেলা দপ্তরের কর্মকর্তার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি পরিবারে দরজায় দ্রুত ত্রান সহায়তা পৌঁছানো হোক। ইতে করে শতভাগ অসহায় দিন মজুর পরিবার ত্রান সহায়তা প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে।