ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৫০ শিশু কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে
রোকনুজ্জামান কুষ্টিয়া॥
হঠাৎ করেই শীত জনিত কারণে শিশুদের অসুখ বিসুখ মাত্রাতিক্ত হারে বেড়েছে। গত তিন দিনে কুষ্টিয়ায় শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসক নার্সদের। তবে আক্রান্তের মধ্যে ০ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরাই বেশী এবং তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ (এআরআই), জ্বর, ঠান্ডা কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বলে ওয়ার্ড সুত্রে জানাগেছে । বর্তমানে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ২৮ বেডের শিশু ওয়ার্ডে ১৪৮ জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গত ৩ দিনে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বর্হিরবিভাগসহ শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় হাজার খানেক শিশু রোগী । এদের বেশীর ভাগ রোগীই ঠান্ডা জণিত কারনে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও শিশু বিশেষজ্ঞদের প্রাইভেট চেম্বারে বাড়ছে অসুস্থ শিশু নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের ভীড়। তবে ৬ মাসের কম বয়সী শিশুরা এআরআই রোগে অধিক সংখ্যায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
এদিকে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের মাত্র ২৮ টি বেড থাকলেও সেখানে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২১ জন শিশু রোগী ভর্তিসহ বারান্দা ও মেঝেতে যত্র তত্র বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছে ১শ ১৪৮ জন শিশু রোগী।
দুপুর ১২ টার দিকে হাসপাতালের বহির্বিভাগ সরেজমিন দেখা গেছে, শিশু বহির্বিভাগের টিকেট কাটার জন্য শিশু নিয়ে অভিভাবকদের লম্বা লাইন। টিকেট বিক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, গত তিনদিন ধরে শিশু রোগীর ভীড় বাড়ছে কয়েক গুন ।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশু ও স্বজনদের ভীড়ে শিশু ওয়ার্ডটি যেন মেছোহাটে পরিণত হয়েছে। কর্তব্যর এক নার্স জানান, ওয়ার্ডটি আগে ২০ টি শয্যা ছিল রোগীর কথা চিন্তা করে ককর্তৃপক্ষ আরো ৮ টি শয্যা বাড়িয়েছেন। এখন মাত্র ২৮ টি শয্যার স্থলে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৪৮ জন রোগী। তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে দুই ৪ জন সিনিয়র নার্সসহ বেশ কয়েক ছাত্রী নার্স রীতিমত হিমসিম খেতে হচ্ছে । প্রতিদিন যত রোগী চিকিৎসা পেয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরছে তার চেয়ে দিগুন আবার ভর্তি হচ্ছে বলে জানান ওই নার্স।
ওয়ার্ডের প্রবেশ পথে মেঝেতে কাত হয়ে ১ বছরের শিশু হালিমা নিয়ে কাত হয়ে শুয়ে আছেন মা। এর মধ্যে দিয়ে রোগীর স্বজনরা যাওয়া আসা করছে আর শিশুকে বুকে নিয়ে মা কাত হয়ে যাতায়তের জন্য জায়গা করে দিচ্ছে। পাশে শিশুটির বাবা উজ্জল দাঁড়িয়ে আছেন। তার সাথে আলাপ কালে জানালেন, ৩ ধরে জ্বর কিন্ত ভালো না হওয়াতে সকালে হাসপাতালে নিয়ে এসে বহিরবিভাগে দেখালে দিক্তার শিশুটিকে ওয়ার্ডে পাটিয়েছেন রক্ত পরিক্ষা দিয়েছেন। পরীক্ষা করানো হয়েছে কিন্তু তখনো রিপোর্ট টি চিকিৎসক দেখেননি তাই চিহ্নিত।
ওয়ার্ডের জায়গা না পেয়ে মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলে জানাগেল, চিকিৎসাধীন রোগীদের বেশীর ভাগই জ্বর, কাশি, ঠান্ডা জ্বরে ভূগছে।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক নাজিম উদ্দিন বলেন, ঠান্ডা জনিত কারনে শিশুরা বিশেষত ছয়মাসের কম বয়সী শিশুরা ঠান্ডা, কাশিসহ তীব্র শ্বাসতন্ত্রেও সংক্রমণজনিত রোগে অধিক সংখ্যায় আক্রান্ত হচ্ছে । শিশুদের বেশি বেশি ফলমূল ও তরল পানীয় খাওয়াতে হবে এবং শিশুদের বিশেষ করে এক বছরের কম বয়সীদের যাতে ঠান্ডা না লাগে, সেদিকে মায়েদের দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
Comments (0)
Facebook Comments (0)