বাউফলের ধুলিয়াবাসী জিন্মী হয়ে পড়ছে চেয়ারমান বাহিনীর অত্যাচারে

বাউফলের ধুলিয়াবাসী  জিন্মী হয়ে পড়ছে চেয়ারমান বাহিনীর অত্যাচারে

জিতেন্দ্র নাথ রায়,বাউফল:
বাউফল উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের দিন পাল্টালেও শুধু পাল্টায়নি ধুলিয়া ইউনিয়ন বাসীর । একদিকে সর্বনাশা তেঁতুলিয়ার ছোবলে  ফসলীজমি, ঘরবাড়ি,গাছপালা দিনদিন ভাঙ্গনের কবলে পড়ে গ্রামগুলো হারিয়ে যাচ্ছে ।ভিটেমাটি শুণ্য হয়ে পড়ছে প্রায় দশসহাশ্রাদ্ধিক পরিবার । অন্যদিকে অব্যাহত সন্ত্রাসী,জমি দখল, চাঁদাবাজি,মারধর নিত্যনৈমত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়ে সন্ত্রাসের  জনপদে পরিণত হয়েছে ধুলিয়া । একসময়ে এ ইউনিয়নের জলদস্যু শহিদুল বাহিনীর নামে বাঘে মোষে একঘাটে পানি খেত । তার পতনের পরে এ ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন দলের  ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনীর অত্যাচারে মানুষ এখন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে । নির্যাতনের ভয়ে কেউ মুখ খুলছেনা এলাকাবাসি। প্রশাসনরে কাছে অভিযোগ দিলে নেমে আসে নির্যাতন উপজেলার মানচিত্রে  সদর থেকে প্রায় পনের কিলোমিটার পাকা কাঁচা সড়ক মাড়িয়ে সর্বনাশা নদী তেঁতুলিয়া  । এ নদীর ক’ল ঘেষেই অবস্থিত ধুলিয়া । এখানকার মানুষ যেমন শিক্ষিত । তেমনি তেঁতুলিয়ার রুদ্ররোষে সহায় সম্বল হারিয়ে মানুষ এখন নিঃস্ব প্রায় । জীবন বাঁচানোর তাগিদে বেছে নিয়েছে জাল ও নৌকা । নদীতে জাল পাতলে হলে জেলেদের দিতে হয় নিয়মিত চাঁদা,।  জেগে ওঠা চর বাসুদেব পাশা। এ  চরে গরু মহিষ চড়াতে হলে বাৎসরিক চাঁদা দিতে হচ্ছে গো-মহিষপালকদের । আর এ কাজটি করানো হচ্ছে জামায়াত বিএনপি থেকে ভোল্ট পাল্টে আসা ভুমি  খেকো হারুন ও আলামিন কারি । এরা ছয়ভাই । ৮০ দশকে তাদের বাবা মৃত নিজাম উদ্দিন ক্বারি   ভোলার চর গঙ্গামতির ছোবলে সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নেয় ধুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৃত মহিউদ্দিনের কাছে । এলাকার মসজিদে মসজিদে কোরাণ শিক্ষা দিতেন  মৃত নিজাম উদ্দিন ক্বারি । বাবার আদার্শ ও সুনামে মানুষের বিশ্বাসী হয়ে হারুণ ও আলামিন স্থাণীয় জামায়াত বিএনপির নেতাদের ছত্রছায়ায় নেমে পড়ে জবর দখল ব্যবসায় ।বাকচতুরতায় বড়ই নিপূণ হারুণ ও আলামিন ক্বারি ।প্রথমে মানুষের সরলতায় বিশ্বাসী হয়ে কিছু টাকা ধার দেন অসহায় পরিবারদের । পরে ওই টাকা সুদ হিসাবে জমি লিখে নেন । গড়ে তুলেছেন  কোটি টাকার সম্পদ ধুলিয়া ইউনিয়ন সংলঘœ জমি,বাড়ি বেকারি ,দোকান প্রতিষ্টান । হারুণের রয়েছে পাশের উপজেলার গৌবিন্দুপর একটি আড্ডাস্থল । সেখানে রয়েছে তার তাস,জুয়া ও মাদকের ব্যবসা ।   এলাকায় কিছু দিনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তাদের প্রতাপ জোতদার লাঠিয়াল হিসাবে ।আশ্রয় নেয় ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদারের । চেয়ারম্যান স্থাণীয় রাজনীতিতে বিএনপির  সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদারের অনুসারি ক্যাডার ছিল । ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি । ২০০১ সালে তার অত্যাচারে এলাকার আওয়ামীলীগ ছিল ঘর ছাড়া । তুচ্ছ ঘটনায় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের সাথে দ্বন্দ্ব হওয়ায় সংষর্ষে ইউনিয়ন সদস্য আব্দুর রব বীর বণে যান । পরে  ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে   ভোল্ট পাল্টে সরকার দলীয় সমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । স্থাণীয় আওয়ামীলীগের সাথে মতানৈক্য থাকায় তাদের সায়েস্থা করতে স্থাণীয় জামায়াত ও বিএনপির ক্যাডারদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে স্থাণীয় ছাত্রলীগ তানজিল,,মাহমুদ,দানেশ মাহমুদ ,মনির হোনের নামের,ছাত্রলীগ ও  যুবলীগ নামের এক ডজন ,   নেতা ও কর্মীকে পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে তার ক্যাডার বাহিনীর  । ইউনিয়নের,ভিজিডি,চাল উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে ।সরকারি গাছ কেটে নেয়াসহ এন্তার অভিযোগ স্থাণীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের । তার সেকেন্ড ইনকমান্ড হারুণ ক্বারি । তার রয়েছে জহিরুল,রিয়াজ,নাঈম,সাইদুল ইমরান,কুদ্দুস,নামের ১০-১২জনের একটি লাঠিয়াল বাহিনী । চর বাসুদেব পাশার গো-মহিষেরে ঘাস খাজনা হিসাবে বছরে দেড়লাখ টাকা করে আদায় করে সে ভোলার কৃষকদের কাছে থেকে।ধুলিয়া নদীর জেলেদের কাছ থেকে অবৈধ চাই পাতাতে হলে বছরে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে । বেড়,জাল জগৎজাল,কারেন্ট জাল ৫০ হাজার টাকা ,জাটকা মাছ ধরতে হলে তিনমাসে একলাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী জেলেদের অভিযোগ ।আর এসব অপকর্মের হোতা হচ্ছে হারুণ ক্বারি ।     স্থাণীয় চেয়ারম্যানের লোক বলে কথা । হারুণের চোখ পড়ে সংখ্যালঘু পরিবার নরেণ চন্দ্র রক্ষিতের পরিবারের ভিটেমাটির ওপর । নরেণ রক্ষিত স্থাণীয় কবিরাজ হিসাবে বেশ নামযস রয়েছে তার । ছোট ভাই বঙ্কিম রক্ষিত আমেরিকা প্রবাসী,চার মেয়ে এক পুত্র ।একমাত্র পুত্র দিলিপ রক্ষিত তিন  কণ্যা শিল্পি রানী,শিউলী,শিপ্রা ভারতের বারাসাতে  বসবাস করছে । বারধ্যক্যের ছোঁয়ার দুর্বলতার আশ্রয় নেয় ভুমি দস্যু হারুণ প্রথমে ধর্ম ভাই ডাকে তার দেখভালের নামে করে আসা যাওয়া করে। পরে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে ৩৪ শতাংশ জমি লিখে নেয় সে । গত ১৮ মে সন্ধায় হারুণ তার বাহিনী নিয়ে নরেণ রক্ষিতকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অলিখিত একটি ষ্টাম্পে দস্তগত করে এলাকায় প্রচার করতে থাকে তার কাছে নরেণ রক্ষিত বাড়িঘর লিখে দিয়ে গেছে বলে । ওই রাতেই নরেণ তার বাড়িঘরে তালা লাগিয়ে স্ত্রী বীণা রানী রক্ষিতকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে । পরে আছে শুণ্য ভিটায় তালাঝুলানো বাড়িটি । কিন্তু নেই নরেণ রক্ষিক ও তার স্ত্রী বীণা রানী নেই ভিটেমাটিতে ।এলাকার নরেণ রক্ষিত ও বীণা রানীই নয় । তার হাতে নিগৃহিত হয়েছে সাবেক ইউনিয়ন সদস্য মামুন পালোয়ান,মৃত নাসির উদ্দিনের কন্যা সাবেক অবঃ জেলা দায়রা জর্জ রোকেয়া বেগম,৫নং ওয়ার্ডের আনন্দ সাধূ, মৃত রশিদ মিয়া,আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন ।  এ বিষয়ে হারুণ ক্বারি জানান,অবৈধ ব্যবসা কিংবা  দখল ও মারধরের অভিযোগ সত্য নয়, এটা তার প্রতিপক্ষের রটানো ঘটনা । সে টাকা দিয়ে নরেণের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে কবলা সুত্রে মালিক হয়েছেন । এ বিষয়ে ধুলিয়া চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদার বলেন , চাঁদাবাজি,নির্যাতন করা এসবতার বিরুদ্ধে  অপপ্রচার ,প্রতিপক্ষের লোকজন ছড়াচ্ছে । তবে হারুণ ক্বারি তার বা দলের নাম করে এসব  অপরাধ করলে তাকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়া হবে । এ বিষয়ে ধুলিয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি  এবং ইউনিয়ন পরষিদের সদস্য আ লা উদ্দিন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত জোট সরকারের সময়ে নিগৃহিত এখন অত্যাচারিত হচ্ছি । তার ছেলে ছাত্রলীগনেতা দানেশ মাহমুদকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে চেয়ারম্যান বাহিনী । এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ  খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,স্থাণীয় লোকজনের মৌখিক অভিযোগ পেয়ে নরেণের বাড়ি পুলিশ পাঠিয়েছি । খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ।