বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে BHRC’র বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত

নিজস্ব প্রতিনিধি:

৭০তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC’র সদর দপ্তরের উদ্যোগে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে একযোগে দিবসটি পালিত হয়েছে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC তার সদর দপ্তর ঢাকা, বহির্বিশ্বের ৪১টি দেশে, দেশের বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং বরিশালসহ দেশের প্রায় সবকটি জেলা, আঞ্চলিক, উপজেলা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, মহিলা, থানা, বাণিজ্যিক ও পৌরসভা এলাকায় নানাবিধ কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালিত হচ্ছে। কর্মসূচীগুলোর মধ্যে রয়েছে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আলোচনা সভা, র‌্যালী, মানববন্ধন, বিশেষ স্মরণীকা প্রকাশ, পোস্টার প্রদর্শনী, কবিতা পাঠ, নাট্যানুষ্ঠান, রক্তদান কর্মসূচী এবং রচনা প্রতিযোগিতা সহ বিবিধ অনুষ্ঠানমালা। BHRC’র সদর দপ্তরের পক্ষে র‌্যালী এবং মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন BHRC’র প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারী জেনারেল ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার, BHRC’র প্রেসিডেন্ট, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী কাজী রেজাউল মোস্তফা, গভর্নর এবং জাতীয় উপদেষ্টা ডা. এএসএম বদরুদ্দোজা, গভর্নর, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ সেকান্দার আলী জাহিদ, ডেপুটি গভর্নর (সিনিয়র) সভাপতি- ঢাকা মহানগর (উত্তর)আক্তারুজ্জামান বাবুল, বিশেষ প্রতিনিধি- সদর দপ্তর, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ)-এর নির্বাহী সভাপতি মোঃ হারুন-অর রশিদ, ঢাকা জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নাসিম উল্লাহ হেমায়েত, ঢাকা মহানগর উত্তর-এর নির্বাহী সভাপতি ডাঃ মোক্তার হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি ও ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ)-এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজমুল হক, BHRC সদর দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মোস্তাক আহমেদ ভূইয়া, মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মোঃ নাজিম উদ্দিন বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা শাখার সভাপতি মিনান্নাহার লিপা প্রমুখ। 
BHRC’র সেক্রেটারী জেনারেল ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করেছেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যাতে করে সাধারণ মানুষ তাদের অতি মূল্যবান আমানত ভোট প্রয়োগ করে নিজের পছন্দমত প্রতিনিধি নির্বাচিত করে নিজ নিজ এলাকায় কল্যাণের লক্ষ্যে প্রতিনিধিকে জাতীয় সংসদে পাঠাতে পারে। BHRC বিশ্বাস করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যতীত দেশে প্রকৃত মানবাধিকার সম্মত পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। বেলা ১০:৩০টায় রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে BHRC’র র‌্যালীটি শুরু হয় এবং জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে গিয়ে র‌্যালীটি শেষ হয়। দুই সহস্রাধিক মানবাধিকার কর্মীর এই র‌্যালীটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচীতে যোগ দেন। 
আজ থেকে ৭০ বছর পূর্বে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গৃহীত সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের আদর্শ ও দর্শন পরবর্তীকালে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলে বিস্তারিতভাবে শুধু সন্নিবেশিতই করা হয়নি বরং তা কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব দলিলে যেকোন ধরনের নির্যাতন-নিপীড়নকে স¤পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক সংবির্ধি (ধারা-৭), ইউরোপীয় মানবাধিকার চুক্তি (ধারা-৩), আমেরিকার মানবাধিকার চুক্তি (ধারা-৭) এবং আফ্রিকান মানবাধিকার চুক্তি বা বানজুল চার্টার (ধারা-৭) সহ বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫(ক) অনুচ্ছেদে নির্যাতনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিশ্বব্যাপী আজ মানবাধিকার লংঘনের এক ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তা কেবল অমানবিকই নয়, যে কোন সময়কার বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষের মানবাধিকার হচ্ছে নিুতম আহার যোগানোর নিশ্চয়তা, কায়িক পরিশ্রমী শ্রমিক-মজুর তাদের ন্যায্য মজুরি পাওয়ার নিশ্চয়তা, অমানবিক নির্যাতন থেকে নিজেকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা, নারীদের ধর্ষিত হওয়ার লোমহর্ষক ঘটনা এবং স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তার আকাক্সক্ষাই হচ্ছে মানবাধিকার দিবসে উন্নয়নশীল বা দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের প্রত্যাশা। এছাড়া বাংলাদেশসহ বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশে রাজনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞ কর্মসূচী কর্তৃক অসংখ্য মানুষ হতাহতের ঘটনা মানবাধিকার সম্মত সমাজ ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।