জীববিজ্ঞান ---২য় পর্ব (Platyhelminthes)

জীববিজ্ঞান ---২য় পর্ব (Platyhelminthes)

শিখা ব্যানার্জী
প্রভাষক,প্রাণিবিজ্ঞান    
বাউফল সরকারি কলেজ    
বাউফল,পটুয়াখালী    
সুপ্রিয় শিক্ষার্থী,        
আজ বলব ৩য় পর্ব Platyhelminthes-এর কথা,নামেই যার পরিচয় নিহিত রয়েছে। যেমন গ্রীক শব্দ Platys মানে চ্যাপ্টা এবং যবষসরহঃয-মানে কৃমি,অর্থাৎ চ্যাপ্টা কৃমি।এ পর্বের প্রজাতি সংখ্যা প্রায় --২৯,৪৮৭,এদের অধিকাংশই পরজীবী,কিছু সংখ্যক মুক্তজীবী।
বৈশিষ্ট্য--
(১)এ পর্বের প্রাণিদের দেহ নরম,উপর-নিচে চ্যাপ্টা,পাতা বা ফিতার মত এবং দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম।
(২)এরাই প্রথম ত্রি¯তরী প্রাণি,অর্থাৎ এদের ভ্রূণ¯তরে এক্টোডার্ম,মেসোডার্ম ও এন্ডোডার্ম তিনটি কোষীয় ¯তর বিদ্যমান। এরা টিস্যু-অঙ্গ মাত্রার গঠন সম্বলিত প্রাণী।
(৩)এদের দেহ-গহবরটি প্যারেনকাইমা অথবা মেসেনকাইম নামক কোষগুচ্ছ দ্বারা পূর্ণ থাকে । অর্থাৎ এদের সিলোম নেই।
(৪)এদের দেহে কোনরূপ খন্ডায়ন দেখা যায়না ,দেহের অগ্রভাগে সুস্পষ্ট ম¯তক অবস্থিত,এছাড়া দেহে বাহ্যিক চোষক বা হুক উভয়ই থাকে,যার দ্বারা এরা পোষক দেহেযুক্ত হয়।
(৫)মুখ,গলবিল ও অন্ত্র নিয়ে এদের পৌষ্টিক নালী গঠিত।কোন  পায়ু ছিদ্র নেই।অর্থাৎ এদের পৌষ্টিক নালী অসম্পূর্ন। দেহের সন্মুখে  অবস্থিত একটি ছিদ্রই মুখ ও পায়ুর কাজ করে ।
 (৭)এদের জননতন্ত্র জটিল ও উন্নত।এরা ঊভলিঙ্গ,নিষেক অভ্যšতরীণ এবং পরিস্ফুটন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ।
(৮)এদের জীবন চক্রে নানাধরনের লার্ভাদশা দেখা যায়-যেমন---মিরাসিডিয়াম,রেডিয়া,সারকেরিয়া ইত্যাদি।
এপর্বের অšতর্গত কয়েকপি প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম---
(১)    Fasciola hepatica

(২)    Taenia solium (ফিতা কৃমি)
(৩)   Convoluta(মুক্তজীবী)
Fasciola I Taenia-র  অর্থনৈতিক গুরুত্ব---
-Fasciola বা যকৃত কৃমি গবাদি পশুর (গরু,ছাগল,ভেড়া)রক্তে,ফুসফুসে,অন্ত্রে বা যকৃতে পরজীবী হিসেবে বাস করে।এদের দ্বারা সৃষ্ট রোগের নাম ফ্যাসিওলাইসিস।এদের পূর্ণাঙ্গ দশা ভেড়া,গরু প্রভৃতির পিত্তনালিতে এবং লার্ভা দশা শামুকের দেহে অভিযোজিত। উক্ত পরজীবী দ্বারা অক্রান্ত গবাদি পশুরা দিন দিন রুগ্ন হয়ে পড়ে, ফলে দুধ ও মাংস উৎপাদন কমে যায় ।
 (২)Taenia--এটি মানুষ ও শূকরের দেহে এদের জীবন  চক্র সম্পন্ন করে।মানুষ এদের মুখ্য পোষক,অর্থাৎ মানুষে এদের যৌন জনন সম্পন্ন হয় এবং শূকরে এদের লার্ভা দশা বিরাজ করে ।
Taenia  দ্বারা আক্রান্ত রোগকে  Taeniasis  বলে ॥
রোগের কারন---
শূকরের অর্ধ-সিদ্ধ বা কাঁচা মাংস খেলে এই রোগ হয় ।
রোগের লক্ষণ---
(১)    রক্তশূণ্যতা দেখা দেয়।(২)¯œায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা নষ্ট হয় । (৩ পেটে খুব ব্যথা অনুভুত হয় ।(৪) বদহজম হয় ।
সুতরাং সুস্থ থাকতে হলে এবং উক্ত পরজীবীর সংক্রমন থেকে বাঁচতে হলে
(১)    মাংস পুরোপুরি সিদ্ধ করে খেতে হবে ।
(২)    আক্রান্ত ব্যক্তির মল যেখানে সেখানে ফেলা চলবেনা ।
(৩)    কৃমি-নাশক ওষুধ---ক্যামাকুইন,কুইনাক্রিন ইত্যাদি সেবন করতে হবে ।
প্রশ্নমালা---
(১)    টিস্যু-অঙ্গ মাত্রা বলতে কি বুঝ?
(২)    ১ম ত্রিস্তরী বৈশিষ্ট্য কোন পর্বে দেখা যায়?
(৩)    এই পর্বে সিলোম নেই কেন?
(৪)    এরা কিভাবে পোষক দেহে যুক্ত হয় ?
(৫)    এদের কোন তন্ত্রটি অধিক কার্যক্ষম এবং কেন?
(৬)    ফ্যাসিওলাইসিস ও টিনিয়াসিস বলতে কি বুঝ?